শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৮:১৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রোটারিয়ান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান সায়েম রোটারি ইন্টারন্যাশনাল’র “অ্যাভিনিউজ অব সার্ভিস” সম্মাননায় ভূষিত ৭ জুলাই সিলেটে বিএনপির মহাসচিবের সমাবেশ সফল করতে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত সিলেটে রোটারিয়ানদের টাউন হল মিটিং সিকৃবিতে জুলাই আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে “জুলাই ৩৬ গেইট” উদ্বোধন ট্রাম্পের আশ্রয় নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করলেন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালত প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে গোলাপগঞ্জের হাওরপাড়ের মুহয়িসসুন্নাহ মাদরাসা নিজস্ব বাস চালুর দাবিতে সুবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ৮ দিনের আল্টিমেটাম ১ লক্ষ টাকা অনুদান পেল বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পাবেলের পরিবার বাইক্কা বিলে বিলুপ্তির পথে রানী মাছ নতুন ৫ লাখ কর্মভিসা দেবে ইতালি

বাইক্কা বিলে বিলুপ্তির পথে রানী মাছ

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই, ২০২৫

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : মৌলভীবাজার জেলার হাওরাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমি বাইক্কা বিলে মাছের উৎপাদন ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। বিশেষ করে রানী মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে, যা হাওর এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য এক অশনিসঙ্কেত।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার বাইক্কাবিল ও হাইল হাওরে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, জেলেরা দল বেঁধে জাল ফেলে মাছ ধরলেও আগের মতো বড় মাছের দেখা মিলছে না। যেসব মাছ ধরা পড়ছে, সেগুলোর আকার ছোট ও পরিমাণও খুব কম। ফলে মাছ ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়ছেন এবং হাটবাজারেও দেশীয় মাছের প্রাপ্যতা কমে গেছে।
স্থানীয় জেলেরা বলছেন, আগে যে রুই, বোয়াল, শোল, আইড়, মৃগেল জাতীয় মাছ প্রচুর পরিমাণে ধরা পড়তো, এখন তা প্রায় নাই বললেই চলে। ইজারাদার ও মৎস্যজীবীরা জানান, হাওরের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ায় মাছের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। বিভিন্ন বিল ভরাট, জলজ বন ধ্বংস, কারেন্ট জালের অবাধ ব্যবহার, নদ-নালার নব্যতা হ্রাস, পুকুর ও ডোবা-নালা ভরাটের ফলে মাছের আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে। যার কারণে রানী মাছসহ প্রায় ২৩টি দেশীয় প্রজাতির মাছ এখন আর আগের মতো পাওয়া যাচ্ছে না।
বাইক্কা বিল, হাইল হাওর ও কাউয়াদিঘী হাওর এলাকাতেও একই চিত্র লক্ষ্য করা যায়। মৎস্যজীবী ও স্থানীয় পরিবেশকর্মীদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষি জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার, সেচ দিয়ে বিলের পানি সম্পূর্ণ নিষ্কাশন করে মাছ ধরা ও বিদেশি রাক্ষুসে মাছের চাষও দেশীয় মাছের বিপন্নতার অন্যতম কারণ।
মৌলভীবাজার জেলা মৎস্য অফিস সুত্রে জানা যায়, হাওরের জলাশয় গুলোতে ২০১৫ সালের পর আর কোনো পূর্ণাঙ্গ গবেষণা হয়নি। ফলে রাণী মাছসহ কোন কোন মাছ এখন সংকটে আছে তার নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান নেই। তবে মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে , চলতি বছরে পুনরায় গবেষণা চালানো হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, হাওরের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা, জলাশয় খনন, অভয়াশ্রম তৈরি, নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের ব্যবহার বন্ধ, এবং পরিকল্পিত মাছ চাষের মাধ্যমে দেশীয় মাছের প্রজাতি রক্ষা সম্ভব।
প্রাকৃতিক ও পরিবেশগত এই সংকট মোকাবেলায় যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে হাওরের মাছ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশবিদরা। তারা মনে করেন, রানী মাছের মতো সুস্বাদু ও গুরুত্বপূর্ণ দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ না করলে আগামী প্রজন্ম এই মাছের নামও হয়তো জানবে না। তাই দেশের বৃহত্তম মিঠাপানির মাছভা-ার হাকালুকি,হাইল হাওর ও বাইক্কা বিলকে রক্ষা করতে হলে এখনই প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ এবং স্থানীয় জনগণকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে ।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..