হাওরের পাড়ে মাদরাসার অবস্থান। তবু পিছিয়ে নেই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলা জামিয়া মুহয়িসসুন্নাহ মানিককোনা হাওরতলা নামের মাদরাসাটি। সিলেটের গোলাগপগঞ্জ উপজেলার এই মাদরাসায় বর্তমানে শতাধিক শিক্ষার্থী কম্পিউটার শিক্ষায় দক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি ডিজিটাল বাংলাদেশের অংশীদার হতে আধুনিক প্রযুক্তির শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে তিনতলা ভবন বিশিষ্ট মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। মাদরাসায় মোট শিক্ষার্থী চার শতাধিক। তার মধ্যে এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে রয়েছে ১৫০ জন শিক্ষার্থী। ২০২৩ সালে মাদরাসায় ১৫টি কম্পিউটার নিয়ে শুরু হওয়া কম্পিউটার ল্যাবটির আলো ছড়িয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। ইতিমধ্যে আরবী, বাংলার পাশাপাশি শতাধিক শিক্ষার্থী কম্পিউটারে দক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
মাদরাসার একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, পেছনে পড়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই। যুগের সাথে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। প্রাইভেট কোনো প্রতিষ্টানে গিয়ে কম্পিউটার শিখতে হলে অনেক টাকার দরকার। সেটি গরিব শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সম্ভব হতো না। কিন্তু এই মাদরাসায় সম্পুর্ণ বিনা খরচে আমরা কম্পিউটার শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছি।
সিসি ক্যামেরা বেষ্টিত মাদরাসায় রয়েছে লাইব্রেরি, কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র, মসজিদ এবং ভালো ফলাফলের ধারাবাহিকতা। উপজেলা পর্যায়ে কওমী মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষার সুযোগ তৈরি একটি নজিরবিহীন ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মো. হিফজুর রহমান। তিনি বলেন গোটা উপজেলার মধ্যে এটি একমাত্র কওমী মাদরাসা, যেখানে কম্পিউটার ল্যাব রয়েছে।
মাদরাসার সভাপতি, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ শফিকুল বারী বলেন, ছনের তৈরী একটি কক্ষ দিয়ে মাদরাসার যাত্রা হয়। তখন যোগাযোগ ব্যবস্থাও অনুন্নত ছিলো। সবার সহযোগিতায় আজ সেটি অনেক বড় একটি প্রতিষ্টানে পরিণত হয়েছে।
মাদরাসার ডোনার, বিশিষ্ট সমাজসেবক এম এর রহমান তিতন এবং মুহিবুর রহমান দুলাল জানান, তাদের পরিবারের উদ্যোগে কম্পিউটার ল্যাব হয়েছে। দেয়া হয়েছে তিনটি কক্ষ। শিক্ষার কল্যাণে এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। তবে মাদরাসার ভবিষ্যত সুন্দর করতে আরো ডোনারদের এগিয়ে আসতে হবে।
১৯৬৭ সালে হাতেগুণা কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ে ছোট পরিসরে মাদরাসার যাত্রা শুরু হলে আজ উপজেলার মধ্যে একটি আদর্শ প্রতিষ্টানে পরিণত হয়েছে।
Leave a Reply